"অবশেষে লালবাগ জুড়ে চলা অবৈধ দেহ ব্যাবসায় কড়া হস্তক্ষেপ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এর "

প্রতীকী ছবি 
স্নেহাশিষ মুখার্জি ও টুম্পা রায়: নবাবের রাজত্ব নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলেও ইতিহাস সমৃদ্ধ নবাবের শহর মুর্শিদাবাদের লালবাগে বেড়ানোর জন্য আগন্তুক অধিকাংশ মানুষজনের  অবৈধ নবাবিয়ানা এখনও চলে রম-রমিয়ে..এখনও ঘুঙুরের আওয়াজ তাঁদের পোড়া মন উদ্বেলিত করে | নিত্য নতুন বারবনিতাদের একটু স্পর্শ না পেলে তাঁদের যৌবন যে একেবারেই বৃথা আর এই রাজত্বে প্রশাসনের একশ্রেণীর অসাধু পুলিশ অফিসারের একান্ত সহযোগিতাতেই আরো সহজ হয়ে চলছে দেহ কেনা বেচা |তাই বিভিন্ন ভাবে ছলে বলে এলাকার টালির বাড়ী থেকে প্রায় প্রতিটি হোটেল ও গেস্টহাউস গুলোতে প্রকাশ্যেই প্রশাসনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে সেই  আদিম জঘন্য ব্যবসা | তাই  গোটা লালবাগ জুড়ে ব্যাঙের ছাতার মত গজিয়ে উঠেছে অবৈধ হোটেল ও তার নেপথ্যে দেহব্যবসা  | কোনো কোনো ক্ষেত্রে গেস্টহাউস ও ঘর ভাড়া দেবার ব্যাবসার নামান্তরে আবার চলছে এপার ওপার বাংলাদেশ থেকে আগত এক শ্রেণীর  সমাজ বিরোধীদের আড্ডা ,নানারকম নাশকতামূলক কাজের পরিকল্পনাও  | যা খুব সত্তরই  মুর্শিদাবাদের মানুষকে বিপদের দিকে ঠেলে দেবে বলে দাবি করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ | আর এই ভাবে জল গড়িয়ে গড়িয়ে গেছে অনেক দূর| 
তবে এর কিছুটা হলেও ছন্দপতন হল মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (লালবাগ) অংশুমান সাহার হস্তক্ষেপে | তাঁর নির্দেশেই প্রশাসনের তরফ থেকে দুই দিন ধরে চলে সাধারণ মানুষজন ও এলাকাবাসীদের এই বিষয়ে সতর্কীকরণ যে কাউকে বাড়ী ভাড়া দিলে ভাড়াটিয়াদের সঠিক পরিচয়পত্র থানায় জমা দিয়ে বাড়ী ভাড়া দিতে হবে এবং এলাকার মানুষদের বলা হয় যদি কোন নতুন ভাড়াটিয়া দেখে ওই ধরণের কিছু সন্দেহ হয় তাহলে তৎক্ষনাৎ একজন দায়িত্বশীল এলাকাবাসী হিসাবে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে | এর পর পরই গতকাল আবার লালবাগ এর বিভিন্ন গেস্ট হাউস ও  হোটেলে লালবাগ SDPO বরুণ বৈদ্য  ও মুর্শিদাবাদ থানার IC আশীষ দেব সহ এক বিশাল পুলিশ বাহিনী নিয়ে সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পযর্ন্ত চলে বিভিন্ন হোটেলএ পরিদর্শণ(রেজিস্টার চেকিং,সিসিটিভি ফুটেজ চেক,প্রশাসনের দেয়া বিশেষ নির্দেশগুলি অবমাননা হচ্ছে কিনা)  ও সঙ্গে রেড |

হাজারদুয়ারির সামনে থেকে চক বাজার হয়ে কুতুবপুর ও স্টেশন এর প্রায় ১৫ টি হোটেল পরিদর্শণ ও তাদের কাছে সঠিক তথ্য সংগ্রহ |বরুণ বৈদ্য জানান আমরা এর আগেও অনেক যায়গায় ঘুরে দেখেছি এখন আগের থেকে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক | এই অভিযান আগামী দিনও চলতে থাকবে,যত দিন না এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে | আমরা খুবই সক্রিয় ভাবে ও বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে এটাকে দেখছি. 


অংশুমান সাহা জানান "আমাদের তরফ থেকে আমরা রেড করছি , কিন্তু অবৈধ হোটেল গুলিকেও চিহ্নিত করতে হবে | এছাড়া সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে | পুলিশ সবসময় রেড করলেই হবে না , সাধারণ মানুষকে পুলিশের সঙ্গে নিয়মিত  যোগাযোগ রাখতে হবে এবং বিভিন্ন হোটেল মালিকদেরও সামাজিক দায়বদ্ধতা মেনে নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে,একটা সুন্দর সমাজ গঠনের জন্য সবারই অবদান অনস্বীকার্য "| সেইজন্য তিঁনি আজ হোটেল মালিকদের ও কর্মরত ম্যানেজারদের নিয়ে একটা মিটিংও রেখেছেন |
পুলিশ এর এই ধরণের সক্রিয় তৎপরতা দেখে এলাকার মানুষজন খুবই খুশী ও প্রশাসনের উপর তাদের হারিয়ে যাওয়া আস্থা আবার  যেন ফেরত পাচ্ছে।এলাকাবাসী মনে করছেন এই ভাবে পুলিশ প্রশাসন কাজ করলে লালবাগ এর উপর লাগা তকমা "দেহব্যবসার আখড়া" ও "পায়সা ফেকো তামাশা দেখো" ট্যাগ লাইন থেকে ইতিহাস সম্মৃদ্ধ ঐতিহ্যবাহী স্বাভাবিক লালবাগে ফিরতে হয়তো খুব একটা সময় লাগবে না |

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment