লালবাগ মহকুমা নেতা রাজীব বলেন "এই মেলায় আগত দর্শনার্থী শুধুমাত্র মুর্শিদাবাদেই আবদ্ধ নয় , অনেকে আসেন মুর্শিদাবাদের লাগোয়া জেলা নদীয়া , বীরভূম থেকেও আর এই মেলার সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য যে পশ্চিমবঙ্গে তথা ভারতের ইতিহাসে এমন খুব কম জায়গা আছে যেখানে একটি জাগ্রত মন্দির দর্শণ করতে দেড় থেকে দু লক্ষ আগতদের মধ্যে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশই মুসলিম সম্প্রদায় | আর ঠিক এই কারনেই নবগ্রামের মাটি সারা পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবাসীর কাছে একটা সমপ্রীতির বার্তা ছড়িয়ে দেয়.. আমাদের ভারতবর্ষ মহান ও ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গণতন্ত্রের দেশ আর তারই একটা ছোট নিদর্শন স্বরূপ উঠে আসে নবগ্রামের 'বিল বসুয়া পৌষসংক্রান্তির মেলা" | এই মেলায় আগন্তুকদের জন্য তৃণমূল সরকার এবং নবগ্রাম ব্লক তৃণমূল কমিটির তরফ থেকে কমপক্ষে ৩০ হাজার রসগোল্লা , লাড্ডূ ও পরিস্রুত জলের ব্যাবস্থা করা হয় | এদিন নবগ্রাম ব্লক সভাপতি মহম্মদ এনায়েতুল্লা ও ব্লক জেনারেল সেক্রেটারি আসিফ ইকবাল আহমেদ জানান আমাদের রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইতিমধ্যে একটি ঘাট ও টেম্পোরারি দুটি টেন্ট এর ব্যবস্থা করা হয়েছে মহিলা পূর্ণার্থীদের জন্য পাশাপাশি দুটি আলাদা ঘর বানানোরও ব্যবস্থা নিশ্চিত হয়েছে এছাড়াও সরকারের তরফ থেকে পুর্ণার্থীদের জন্য আগামী বছরে আরো কিছু বড়ো পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে গ্রহণ করা হবে |
আগত ভিন্ন ধর্মের ভিন্ন গোষ্ঠীর পূর্ণার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় কেউ বা আসে পূর্নার্জনের জন্য , কেউ বা মানতের জন্য | তাঁদের কাছে মা বিল বসুয়া এক জাগ্রত মন্দির | তাঁদের বিশ্বাস মা বিলবসুয়া কাউকে কোনোদিন ফেরান না | ভক্তিভরে ডাকলে তাঁকে পাওয়া যায় | মূলতঃ এই মন্দিরে মঙ্গল ও শনি বারে বিশেষ পূজা অর্চনা হয় | আর এই মেলাকে উপলক্ষ্য করেই বিভিন্ন ধর্মের বিভিন্ন জাতের মানুষ একত্রিত হওয়ার কারণেই মানুষের মধ্যে কোথায় যেনো রাজনৈতিকগত পার্থক্য হারিয়ে গিয়ে মানুষের মধ্যে ঐক্যতার বন্ধন চলে আসে | আর সেই ঐক্যতা হল মানবতা |
এদিন প্রশাসনিক তৎপরতায় স্বস্তিতে মেলায় আনন্দ উপভোগ করেছেন ভক্তবৃন্দরা | মেলাকে উপলক্ষ্য করে প্রশাসনের তরফ থেকে যেভাবে সিভিক ভলেন্টিয়ার ও অফিসারদের নিয়োগ করা ছিলো তা চোখে পড়ার মতন | ফলে খুব সুষ্ঠ ভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাগমেও মেলেনি কোন অপ্রিতীকর ঘটনা | তবে প্রশাসনিক তৎপরতায় এদিন ভীড় থেকে ধরা পড়ে এক পকেটমার যাকে পুলিশ নবগ্রাম থানায় নিয়ে যায় |
কিন্তু প্রত্যেকটি ব্যবস্থা সঠিক থাকলেও অধিকাংশ পুর্ণার্থীদের একটাই সবিনয়ে আবেদন বাদশাহী লিংক রোড থেকে মা বিল বসুয়ার মন্দিরটি এক কিলোমিটারের অধিক রাস্তা আর এই রাস্তাটি পুরোপুরি মাটির তৈরি | তাই রাজ্য সরকার মা মাটি মানুষের মুখমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর কাছে সাধারণ মানুষের আবেদন যে রাস্তটি সম্প্রসারিত ও পিচের তৈরি হোক তাহলে আগামীদিনে নিঃসন্দেহে পূর্ণার্থীর সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে পাশাপাশি সরকারের এই ধরণের পদক্ষেপ তাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে ঠিক যেমন সাগর মেলাকে এক নতুন মাত্রা দিয়েছে শাসক দল |
0 comments:
Post a Comment