এন এন এস [কলকাতা] ৪ঠা জুনঃ এবারের লোকসভা নির্বাচনে গেরুয়া শিবিরের নেতারা পূর্ব ভারতে উড়িষ্যার পর পশ্চিমবঙ্গে ভাল ফলের জন্য প্রথম থেকেই জোর দিয়ে ছিলেন। কিন্তু রাজ্যের ৪২টি আসনের ভোট গণনার প্রবণতা থেকে বলা যে এবার পশ্চিমবঙ্গে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস এক তরফা জয়ের দিকে।
রাজ্যের সমস্ত কেন্দ্রের ভোট গণনার প্রবণতা থেকে বলা যায় যে, গেরুয়া শিবির রাজ্যে ভাও ফল ও জন সমর্থন হাসিল করতে মরিয়া ছিল। সন্দেশখালিতে নারী নির্যাতন ও সাজাহানের সলবলেরে অত্যাচার, রাজ্যে ভয়াবহ দুর্নীতি, রাজনৈতিক হিংসা-সন্ত্রাসকে ইস্যু করার পাশে বিজেপি হিন্দুত্বের রাজনীতিতে জোর দেয়।
রাজ্যে মুসলিম প্রধান এলাকা ও মিশ্র এলাকায় ভাল রকমের হিন্দুত্বের চোরাস্রোত, সাম্প্রদায়িক মেরুকরণের রাজনীতি থেকে ফায়দা পেতে চেয়ে ছিল বিজেপি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভারত সেবাশ্রম সংঘ, ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশনের মত প্রতিষ্ঠানের সন্ন্যাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে বিরূপ মন্তব্য, শিলিগুড়ির রামকৃষ্ণ মিশনে হামলা ও জমি দখলের চেষ্টাকে ভালভাবে নেয়নি বঙ্গ সমাজ। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তার পাকাপোক্ত মুসলিম ভোট ব্যাংকে ফাটলের চেষ্টায় সক্রিয় ছিল একদিকে বাম-কংগ্রেস জোট, অন্যদিকে নওশাদ সিদ্দিকির দল আই এস এফ। এরা মুসলিম ভোতে কিছুটা ভাঙ্গন ধরাতে সক্ষম হওয়ার এডভান্টেজ পেয়েছে গেরুয়া শিবির।
উত্তরবঙ্গ, জংগল মহলে বিজেপির শক্ত ঘাটিতে তেমন ভাঙ্গন ঘটেনি। এখনও পর্যন্ত এগিয়ে বা জয়ের সংবাদ এসেছে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে। বিজেপি এগিয়ে উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং-রাজু বিস্তা, আলিপুরদুয়ারে-মনোজ টিজ্ঞা, বালুরঘাট-সুকান্ত মজুমদার, জলপাইগুড়িতে-জয়ন্ত রায়, কোচবিহারে-নিশীথ প্রামানিক, রা্যগঞ্জ-বিজেপি, উত্তর মালদহ-খগেন মুর্মূ। দক্ষিণবঙ্গে বিজেপি পিছয়ে আছে- জয় পেয়েছে- বনগাঁ- শান্তনু ঠাকুর, রাণাঘাট- জগন্নাথ সরকার, ব্যারাকপুর- অর্জুন সিং, হুগলি- লকেট চট্টোপাধ্যায়, আরামবাগ- বিজেপি, বাঁকুড়া- সুভাষ সরকার, বিষ্ণুপুর- সৌমিত্র খাঁ, পুরুলিয়া- জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, মেদিনীপুর- অগ্নিমিত্রা পাল, ঝাড়গ্রাম- প্রণত টুডু, কাথি- সৌম্যেন্দু অশিকারী, তমলুক- অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়, আসানসোল- সুরেন্দ্র সিংহ আলুওয়ালিয়া, দুর্গাপুর-বর্দ্ধমান- দিলীপ ঘোষ।
১১টি আসনে বিজেপি এগিয়ে আছে। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস এগিয়ে ডায়মন্ড হারবার- অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মথুরাপুর- বাপি হালদার, জয়নগর- প্রতিমা মন্ডল, যাদবপুর- সায়নী ঘোষ, উত্তর কলকাতা- সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দক্ষিণ কলকাতা- মালা রায়, দমদম- সৌগত রায়, বারাসাত- কাকলি ঘোষ দস্তিদার, বসিরহাট- হাজি নুরুল, হাওড়া- প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, উলুবেড়িয়া- সাজদা আহমেদ, শ্রীরামপুর- কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বীরভূম- শতাব্দী রায়, বোলপুর- অসিত মাল, পুর্ব বর্দ্ধমান- শর্মিলা সরকার, জংগিপুর- খলিনূর রহমান, মুর্শিদাবাদ- আবু তাহের খান। ৩১টি আসনে জয়ের মুখে তৃণমূল। কংগ্রেসের অধীর চৌধুরী ত্রিমুখি লড়াইয়ে পিছেয়ে বহরমপুর কেন্দ্রে।
এখন পর্যন্ত্য ভোটের শতাংশে বিজেপির ৩৭ শতাংশ ও তৃণমূল কংগ্রেস ৪৮ শতাংশের কাছে ভোট পেয়েছে। বাম-কংগ্রেস জোট ১২ শতাংশ ভোত পেয়েছে। তৃণমূলের দাবি শেষ পর্যন্ত্য তারা ৩৪ আসন জিতিতে চলেছে।
0 comments:
Post a Comment