জুনিয়র ডাক্তারদের একরোখা আন্দোলনই ভাঙছে হাসপালের ঘুঘুর বাসা

 


Indiapost24 Web Desk:আরজিকর কাণ্ডের পরপরই 'থ্রেট কালচার' ও দুর্নীতিতে জড়িতদের মুখোশ খুলে দিতে এককাট্টা হয় জুনিয়র ডাক্তররা। সেই পথে হেঁটেই এককাট্টা হয়ে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল 'শোধন'-এর আন্দোলনে সেখানকার জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সেই অনড় অন্দোলনের জেরে শেষ পর্যন্ত বর্ধমান হাসপাতাল থেকে বিদায় নিশ্চিত চিকিৎসক অভীক দে’র স্ত্রী নুপুর ঘোষের। তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছেড়ে যত শীঘ্র সম্ভব চলে যেতে হবে ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিষ্টি হাসপাতালে। একইসঙ্গে আন্দোলনকারীদের চাপের কাছে নতিস্বীকার করে 'ডিন' পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য হলেন চিকিৎসক তাপস ঘোষ।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায়ের দফতর থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি  জারি করা হয়েছে।  সেই বিজ্ঞপ্তির বিষয়টি ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশনের সেক্রেটারির নজরেও আনা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, 'রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের নির্দেশক্রমে ডা: নুপুর ঘোষকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের প্রসূতি বিভাগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাকে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিষ্টি হাসপাতালে কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে।’

নুপুর  ঘোষ বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রসূতি বিভাগের 'সিনিয়র রেসিডেন্সি' পদে কর্মরত ছিলেন। এক বছর আগেই তাঁর বদলির নির্দেশ ছিল। কিন্তু কোনও এক অজ্ঞাত কারণে সেই নির্দেশ কার্যকর হয়নি। এনিয়ে জুনিয়র ডাক্তরদের কটাক্ষ, ডা: নূপুর ঘোষ আখেরে সন্দীপ ঘোষের সিন্ডিকেটের চিকিৎসক অভীক দে'র স্ত্রী বলেই হয়তো বদলির নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখাতে পেরেছিলেন। এদিকে চিকিৎসক নূপুর ঘোষের বদলি নিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, "আগে থেকেই তাঁর বদলির নির্দেশ ছিল। কিন্তু আমাদের হাসপাতালে চিকিৎসকের অভাবের জন্যই তাঁকে ছাড়া হয়নি।"

শুধু ডাক্তার নুপুর ঘোষের বদলিই নয়, ডাক্তার তাপর ঘোষের বিরদ্ধে 'নম্বর' দুর্নীতি ও 'থ্রেট' কালচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আনেন বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা তাপস ঘোষের সহ অধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার তথা 'ডিন অফ স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স' পদ আঁকড়ে থাকা নিয়ে সরব হন। এক ব্যক্তিকে এক পদে নিয়োগের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে ডাক্তার তাপস ঘোষকে 'ডিন' পদ থেকে অপসারণের দাবিতে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে বুধবার ঘেরাও করেছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।

তাঁদের সেই দাবির কাছে নতিস্বীকার করে শেষ পর্যন্ত ডিন পদ থেকে ডাক্তার তাপস ঘোষ পদত্যাগ করেন। তাপস ঘোষের পদত্যাগের বিষয়টি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের তরফে ইতিমধ্যেই ই-মেল মারফl ন্যাশানাল মেডিকেল কমিশনের সেক্রেটারিকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। 

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে আরও কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।  তৃতীয় নির্দেশিকায় তা উল্লেখ করা হয়েছে। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের অভিযোগের তালিকায় থাকা বেশ কয়েকজন ছাত্র, ইন্টার্ন, জুনিয়র ও সিনিয়র রেসিডেন্টের জন্য কলেজ ক্যাম্পাস ও হস্টেলে প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবত থাকবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আত্মপক্ষ সমর্থনে তারা তদন্ত কমিটির ডাকে ক্যাম্পাসে আসতে পারবে। এর মধ্য রয়েছে ৯ জন ছাত্রছাত্রী, ৫ জন ইন্টার্ন, ২ জন জুনিয়র রেসিডেন্ট এবং ২ জন সিনিয়র রেসিডেন্ট।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment