বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশ সরকার বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক করার ঘোষণা দেয়ায় তার বিরোধিতা করেছে প্রখ্যাত ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম দেওবন্দ।
উত্তর
প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকার সম্প্রতি সবধর্মের মানুষের জন্য বিবাহ
নিবন্ধন করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু দেওবন্দের আলেমরা তার বিরোধিতা
করেছেন। তারা বিবাহ রেজিস্ট্রেশনকে অপ্রয়োজনীয় বলে মন্তব্য করেছেন।
আজ
(বৃহস্পতিবার) গণমাধ্যমে প্রকাশ দারুল উলুমের মুহতামিম মুফতি আব্দুল কাশিম
নোমানী বলেন, ‘রাজ্য সরকার বিবাহ রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করার যে
সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অপ্রয়োজনীয়। তারা বিবাহ নিবন্ধনের বিরোধী নন কিন্তু
জোর করে কাউকে নিবন্ধনে বাধ্য করা সংবিধান প্রদত্ত ধর্মীয় স্বাধীনতার
বিরোধী। ধর্মীয়ভাবে বিবাহ স্রেফ নিকাহ করলেই হয়ে যায়। দু’জনকে সাক্ষী রেখে
লেখা ‘নিকাহনামা’ বিয়ের নিবন্ধনকরণ। কিন্তু বিবাহ নিবন্ধন না করলে তাকে
আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিত করার কথা বলা সরাসরি নিপীড়নমূলক সিদ্ধান্ত।‘
দারুল
উলুম ওয়াকফের শায়খুল হাদীস মাওলানা আহমদ খিজির শাহ্ মাসউদি বলেন, ‘যারা
বিবাহ নিবন্ধন না করবে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা করা অথবা আইনি পদক্ষেপ নেয়া
উচিত নয়।’
দারুল
উলুমের সিনিয়র মুফতি আরিফ কাশেমি বলেন, ‘ইসলামে বিবাহকে সহজ করা হয়েছে।
বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক হলে গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত মানুষজন সমস্যায়
পড়বেন।’
দেওবন্দের
আলেমরা বলছেন, তারা বিবাহ নিবন্ধনের বিরোধী নন কিন্তু যারা তা করবে না
তাদের সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত হয়রানিমূলক।
গত
১ আগস্ট মঙ্গলবার উত্তর প্রদেশের যোগী আদিত্যনাথ সরকারের মন্ত্রীসভা
‘উত্তর প্রদেশ বিবাহ নিবন্ধন বিধিমালা-২০১৭’তে সব ধর্মের মানুষদের জন্য
বিবাহ নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এজন্য ‘আধার কার্ড’
প্রয়োজন হবে। এক বছরের মধ্যে নয়া এবং পুরোনো সমস্ত বিবাহ নিবন্ধন করার
সময়সীমাও বেঁধে দেয়া হয়েছে। তা না করলে সমস্ত সরকারি সুবিধা থেকে তারা
আলাদা হয়ে যাবেন।
উত্তর
প্রদেশ সরকারের মুখপাত্র সিদ্ধার্থনাথ সিং বলেন, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা
নেয়ার জন্য যখন বিবাহিত হওয়ার প্রমাণপত্র প্রয়োজন হবে তখন তার প্রমাণপত্র
দিতে হবে।
দারুল
উলুম জাকারিয়ার সিনিয়র উস্তাদ ও ফতোয়া অনলাইনের প্রধান মাওলানা মুফতি
আরশাদ ফারুকির মতে এটা সরকারের জোর করে চাপিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন,
যদি রাজ্যের বাসিন্দাদের সকলের ‘পরিচয়পত্র’ এবং ‘আধার কার্ড’ থাকে তাহলে ওই
সিদ্ধান্ত ঠিক আছে। কিন্তু রাজ্যবাসীর অনেকেরই ‘পরিচয়পত্র’ এবং ‘আধার
কার্ড’ নেই সেজন্য ওই সিদ্ধান্ত ঠিক নয়।
এদিকে,
নারী কল্যাণ বিভাগের প্রধান সচিব রেণুকা কুমার বলেন, যাদের একাধিক স্ত্রী
আছে তাদের সমস্যার কারণ নেই। তারা আলাদা আলাদা ফরম পূরণ করে নিবন্ধন করতে
পারবেন বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন।
0 comments:
Post a Comment