অনিন্দ্য সরকার:মুর্শিদাবাদ
শহরের বড়ো ইমামবাড়া ও নবাব বাহাদুর স্কুলের মধ্যবর্তী স্থানে এই প্রাসাদটি "রাজমহল দেওড়ী(ফক্সেস কুঠী)" অবস্থিত
।বাংলা বিহার ওড়িষার রাজধানী মুর্শিদাবাদ , অষ্টাদশ শতকের গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক পীঠস্থান।পাশাপাশি দেখা গিয়েছে জ্বলন্ত দেশপ্রেম আর ঘৃণ্য বিশ্বাসঘাতকতা ।
নবাব মুর্শিদকুলি - আলিবর্দি - সিরাজউদ্দৌলা - মীরজাফর - মীরকাশিমের স্মৃতি বিজড়িত সেই মুর্শিদাবাদ । বাংলার ইতিহাসের বহু উত্থান পতনের নিরব সাক্ষী । নবাবী আমলের রাজধানী মুর্শিদাবাদের আড়ম্বর আর জাঁকজমকের কথা লেখা আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে । আয়তনে , জনসংখ্যায়ও ঐশ্বর্যে সেকালের মুর্শিদাবাদ ছিল লন্ডনের চেয়েও বড় ।
নবাব মুর্শিদকুলি - আলিবর্দি - সিরাজউদ্দৌলা - মীরজাফর - মীরকাশিমের স্মৃতি বিজড়িত সেই মুর্শিদাবাদ । বাংলার ইতিহাসের বহু উত্থান পতনের নিরব সাক্ষী । নবাবী আমলের রাজধানী মুর্শিদাবাদের আড়ম্বর আর জাঁকজমকের কথা লেখা আছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক গ্রন্থে । আয়তনে , জনসংখ্যায়ও ঐশ্বর্যে সেকালের মুর্শিদাবাদ ছিল লন্ডনের চেয়েও বড় ।
পলাশী
যুদ্ধের পর স্বয়ং লর্ড ক্লাইভ বলেছিলেন ---- " The city of Murshidabad is as extensive , populous and rich as the city of London with
this difference that there are individuals in the first possessing infinitely
greater property then in the last city "
আঠারো শতকে রাজধানী মুর্শিদাবাদের এলাকা ছিল ভাগীরথীর পশ্চিম তীরে
খোশবাগ থেকে বড়নগর , আর পূর্ব তীরে
মতিঝিল থেকে মহিমাপুর পর্যন্ত । এই বিশাল নগরী জুড়ে ছিল অসংখ্য প্রাসাদ , অট্টালিকা আর রমণীয় উদ্যান ।
অষ্টাদশ শতকের প্রথম থেকে মুর্শিদাবাদের উত্থানের সাথে সাথে অসংখ্য
স্থাপত্য নির্মিত হয়ে এসেছে এই ঐতিহাসিক শহর তথা জেলায় ।কালের বিবর্তনে অসংখ্য
স্থাপত্য আজকে হয় ধ্বংসপ্রাপ্ত না হয় ধ্বংসের প্রহর গুনছে ।
তখন ১৭৫৮ সাল । জগত্ শেঠ , রায়দুর্লভ
, উমিচাঁদ প্রভৃতি রাজ কর্মচারী ও উচ্চ
স্থানীয় ব্যক্তিদের দ্বারা প্ররোচিত মীরজাফর বিশ্বাসঘাতকতার দ্বারা পলাশী বিজয়ের
পরে মোটামুটি শান্তিতে রাজত্ব করছেন এই মুর্শিদাবাদের মাটিতে । নাট্যমঞ্চের এই
নতুন পটভূমিতে রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ পদ গুলিতে নতুন নতুন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ
হতে থাকে ।
সম্ভবত এই সময়েই নবাব মীরজাফর তাঁর নিজের ভাই " ইত্রামুদ্দৌলা সৈয়দ কাজেম আলি খান " কে রাজমহলের
ডেপুটি নাজিম নিযুক্ত করেন এবং মুর্শিদাবাদ শহরে ডেপুটি নাজিমের বাসস্থান
নির্মিত হয় কেল্লা নিজামতের কাছাকাছি " Lobegang " এলাকায় । এই ভবনটি তখন " রাজমহল " দেওড়ী নামে পরিচিতি পেতে
থাকে ।
২১ শে নভেম্বর ১৮৫৯ সালে ইত্রামুদ্দৌলা সৈয়দ কাজেম আলি খানের পৌত্রের
পুত্র " আমিরুদ্দৌলা " এর মৃত্যুর পরে , বৃটিশ সরকারের আদেশে রাজমহল " রিয়াসত্ " অবলুপ্ত হয় এবং
সাথে সাথে রাজমহলের ডেপুটি নাজিম পদটিও অবলুপ্ত হয়ে যায় । পরবর্তীতে সৈয়দ কাজেম
আলি খানের উত্তর পুরুষ কোনো একজন সদস্যের সাথে নবাব নাজিম মোবারক উদ্দৌলার মেয়ের বিবাহ সম্পন্ন হয় ।
ডেপুটি নাজিম পদটি অবলুপ্তির পরে এই প্রাসাদ গভর্নর জেনারেলের এজেন্ট " মি.
ফক্স." এর বাসস্থান হিসেবে ব্যবহৃত হতে থাকে । বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে
মুর্শিদাবাদের দ্বিতীয় নবাব বাহাদুর ওয়াসিফ আলী মীর্জার উপপত্নী হিসেবে পরিচিত
" সুশীলা ঘোষ " এই প্রাসাদে বসবাস করতেন ।
এই প্রাসাদটি অতীতে মুর্শিদাবাদ এস্টেট এর নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল । বর্তমানে এই প্রাসাদটি রাজ্যসরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন । সাধারণ মানুষের এখানেকোনো প্রবেশাধিকার নেই ।
এই প্রাসাদটি অতীতে মুর্শিদাবাদ এস্টেট এর নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল । বর্তমানে এই প্রাসাদটি রাজ্যসরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন । সাধারণ মানুষের এখানেকোনো প্রবেশাধিকার নেই ।
0 comments:
Post a Comment