নোয়াপাড়ায় তৃণমূল ভাঙতে অতি সক্রিয় গেরুয়া শিবির

মৃত্যুঞ্জয় সরদার :২৯ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার উলুবেড়িয়া লোকসভার কেন্দ্রের সঙ্গে উপ নিবার্চন হতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের শিল্পাঞ্চল নোয়াপাড়ায়। এদিকে নোয়াপাড়ায় বিধানসভা কেন্দ্রের উপ নিবার্চনে বিজেপি প্রার্থী হতে পারেন এই কেন্দ্রের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক মঞ্জু বসু এমনটাই জল্পনা রাজনৈতিক মহলে। 
নোয়াপাড়া উপ নিবার্চনের আগে মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপি শিবির তৃণমূল ভাঙতে অতি সক্রিয় ভুমিকা নেওয়ার তৃণমূলের প্রাক্তন বিধায়ক মঞ্জু বসুর সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ঠান্ডা করার  চেষ্টা করেন উত্তর ২৪ পরগনার জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ। সুত্রের খবর যে,বিজেপির হয়ে মঞ্জু বসুর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে বলেছেন তৃণমূলের প্রাক্তন নেতা মুকুল রায়। 

সুত্রের খবর যে, বিজেপির তরফে মঞ্জু বসুর প্রার্থী হওয়ার খবর চাউর হতেই তাঁর সঙ্গে কথা বলেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূল পর্যবেক্ষক নির্মল ঘোষ। তাঁর মান ভাঙানোর চেষ্টা করা হয় বলে জানা গিয়েছে। বাম আমলে ২০০০ সালে খুন হন মঞ্জুর স্বামী গাডুলিয়া এলাকায় তৃণমূল নেতা বিকাশ বসু। উত্তর ২৪পরগনার এক প্রভাবশালী তৃণমূল নেতারা বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। যদিও সেই খুনের আজও কিনারা হয়নি। 

বাম আমলে ২০০১ সালে এবং ২০১১ সালে আরও একবার নোয়াপাড়া থেকে নিবাচিত হয়েছিলেন মঞ্জু বসু। ২০১১ সালে ৪১ হাজারের বেশি ভোটে। ২০১৬ সালে মঞ্জু বসুই বাম -কংগ্রেস জোট প্রার্থী নোয়াপাড়ায় প্রয়াত বিধায়ক মধুসূদন ঘোষের কাছে ১০৯৫ ভোটে পরাস্থ হন। মধুসূদন ঘোষের মৃত্যুর পরেই তৃণমূলের প্রার্থী পদ নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়। নিবার্চনে ঘাসফুল প্রতীকের প্রার্থী ছিলেন নোয়াপাড়ায় তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারপারসন মঞ্জু বসু। বিধায়ক হিসেবে এলাকায় তাঁর পরিচিত থাকলেও, সেই প্রার্থী পদের ছিলেন ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান মলয় ঘোষ এবং গারুলিয়া পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল সিং।
শেষ পর্যন্ত সুনীল সিংকেই প্রার্থী হিসাবে বেছে নেয় তৃণমূল। সুনীল সিং আবার ভাটপাড়ায় বাহুবলি তথা দাপুটে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক, ভাটপাড়ার পুরপ্রধান অর্জুন সিং এর আত্মীয়, নোয়াপাড়ায় মঞ্জু বসুর অনুগামীদের দাবী, ২০১৬ সালে তৃণমূলের গোষ্ঠি কোন্দলের জেরেই হেরেছিলেন মঞ্জু বসু। তাঁকে দলের একাংশেই হারিয়েছিলেন। আর উপ নিবার্চন স্থানীয় কর্মীরা মঞ্জু বসুকে পছন্দ করলেও, অজুন সিং এর জন্যই নোয়াপাড়ায় প্রার্থী করা হয়েছে সুনীল সিংকে, এমনটাই দাবী স্থানীয় তৃণমূল কর্মীদের একাংশের। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে,মুকুল রায়ের মাধ্যমে বিজেপি নোয়াপাড়া উপ. নিবার্চনের আগে তৃণমূল ভাঙার চেষ্টা চালালেও তার বড় রকমের প্রভাব পড়বে না। 

এরই মধ্যে সিপিএমের তরুণ প্রার্থী গাগী চট্রোপাধ্যায় নোয়াপাড়ায় মহল্লায় ডোর টু ডোর প্রচারে নেমে গেরুয়া শিবিরের স্থায়ুর চাপ অনেকটাই বাড়িয়ে দিতে সমর্থ হয়েছেন। রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে,নোয়াপাড়ার তৃণমূলের জয় যেমন নিশ্চিত হতে চলেছে, তেমনি বিজেপিকে পিছনে ফেলে সিপিএম দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসার লড়াই চালাচ্ছে। বিজেপি তৃণমূলকে না ভাঙলে নোয়াপাড়ায় তেমন দাগ কাটতে পারবে না সে বিষয় নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।
Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment