ভারতীয় ভোক্তাদের ওপরেই মোদীর ভরসা

 



Indiapost24 Web Desk:ভারতের কিছু এলাকায় আগস্টে এক সপ্তাহেই পুরো মাসের সমান বৃষ্টি হয়েছে। যদিও রাজধানী দিল্লি এই খারাপ আবহাওয়ার প্রভাব থেকে কিছুটা রেহাই পেয়েছে। ঠিক একই সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ওপর দিয়ে একটি রাজনৈতিক ঝড় বয়ে গেছে।


মাসের শুরুতেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভারতের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। কিছুদিন পরই আরও এক দফা ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়ে দেন। এক্ষেত্রে মূল কারণ দেখানো হয় ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে। যা মোদীর জন্য বড় রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে ভারতের রপ্তানি বৃদ্ধির পরিকল্পনা ব্যাহত হবে এবং মোদীর 'কঠোর নেতা' ইমেজও কিছুটা চাপে পড়েছে।


বিহারে ভোটার তালিকা দ্রুত এতে অনেককে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া,কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, গত সাধারণ নির্বাচনে অনিয়ম হয়েছে এবং নির্বাচন কমিশন শাসকদলের সঙ্গে মিলে কাজ করেছে।


এই সব অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ঝড়ের মধ্যেও প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বস্তির কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন। কারণ সাধারণ মানুষ এসব রাজনৈতিক ইস্যুর চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় পকেটের অবস্থার ওপর এবং সেখানে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।


ভারতে মূল্যস্ফীতি কমেছে। জুলাই মাসে বার্ষিক মূল্যস্ফীতি ছিল মাত্র ১.৬ শতাংশ গত আট বছরে সবচেয়ে কম। এর কারণ ভালো ফসল এবং পর্যাপ্ত বর্ষা। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ধারা আগামী বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।


ভারতের প্রায় অর্ধেক মানুষ কৃষির সঙ্গে জড়িত। ভালো ফসলের কারণে মে মাসে কৃষিখাতে প্রকৃত মজুরি বেড়েছে ৪.৫ শতাংশ যা আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এতে গ্রামাঞ্চলে ভোগব্যয় বেড়েছে এবং মহামারি পরবর্তী দুর্বল সময় কাটিয়ে গ্রামীণ অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। সরকারও নারীদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্প চালিয়ে সহায়তা করেছে।


মূল্যস্ফীতি কমায় রিজার্ভ ব্যাংক সুদের হার কমানোর সুযোগ পেয়েছে। এ বছর এরই মধ্যে এক শতাংশ হার কমানো হয়েছে এবং ডিসেম্বরের মধ্যে আরও ০.২৫ শতাংশ হ্রাসের সম্ভাবনা রয়েছে। এতে গৃহঋণধারী সাধারণ মানুষ কিছুটা বাড়তি টাকা হাতে পাচ্ছেন।


সরকার এ বছরের শুরু থেকেই মধ্যবিত্তের জন্য আয়করে ছাড় দিয়েছে। এখন বার্ষিক ১২ লাখ টাকা (প্রায় ১৩,৭০০ ডলার) পর্যন্ত আয় করলে কর দিতে হবে না। আগে এই সীমা ছিল ৭ লাখ টাকা। এর ফলে আয়করদাতাদের ৮৫ শতাংশ এর বেশি মানুষ করমুক্ত হচ্ছেন।


১৫ আগস্ট মোদী ঘোষণা করেন, দীপাবলির আগে জিএসটি কর কাঠামো সহজ করা হবে। বর্তমানে ৪ স্তরের কর ব্যবস্থাকে দুটি স্তরে নামিয়ে আনা হবে। ফলে জুতা থেকে গাড়ি পর্যন্ত অনেক পণ্যের দাম কমবে।


কম মূল্যস্ফীতি, সুদের হার ও কর সংস্কারের ফলে বাড়বে দেশের ভোক্তা ব্যয়। আমেরিকার শুল্কে রপ্তানি কমে গেলেও, দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা তা কিছুটা পুষিয়ে দিতে পারে। ভোটারদের কাছে ভোটার তালিকা বা রপ্তানি হ্রাসের চেয়ে একটা নতুন ওয়াশিং মেশিন কেনা বা ভালো রেস্তোরাঁয় খাওয়া বেশি তাৎপর্যপূর্ণ।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment