দাঁত দিয়ে নখ কাটা বিশ্বব্যাপী মানুষের এক সাধারণ অভ্যাস। আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতেই মূলত মানুষ দাঁত দিয়ে নখ কাটে। যখন বিরক্ত বোধ করি, তখন এটা আমাদের স্বস্তি দেয়। একইভাবে ক্লান্ত বা হাতাশার সময়েও সাময়িকভাবে আমাদের শান্ত করে। একটা মানসিক প্রশান্তি দেয়, এটা একটা মানসিক বিশ্বাস, আর কিছুই নয় বলেই বদভ্যাস জেনেও একজন মানুষ তার মনের অজান্তে নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও করেই চলে এটি l
গবেষণালব্ধ ফল বলে যে, যাদের অনিকোফাজিয়া অথবা এ ধরনের অভ্যাস রয়েছে, তারা বিষণ্ণ, বিরক্ত, উদ্বিগ্ন অবস্থায় দাঁত দিয়ে নখ কেটে থাকেন। আর অস্বাভাবিক আকৃতির নখ স্বস্তির অনুভূতি দেয়। কেবল মানুষই নয়। কিছু কিছু প্রাণীরও এমন অভ্যাস রয়েছে। বিড়ালকে দেখা যায়, দিনের বেশ খানিকটা সময় তার শরীর চেটে পরিষ্কার করতে এবং দিনের একটা দীর্ঘ সময় ঘোড়া তার শরীর কামড়াতেই থাকে। মানুষ এবং প্রাণীদের এই আচরণকে কোনোভাবেই ‘অবসেসিভ’ বলা যাবে না।
দাঁত দিয়ে নখ কাটাকে চিকিত্সা ভাষায় বলা হয় ‘ওনিকোফ্যাজিয়া’। শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘ওনিকো’ এবং ‘ফ্যাজিয়া’ শব্দ দুটোর মিলনে তৈরি। আর ‘ওনিকো’ এসেছে ‘ওনিক্স’ থেকে, যার অর্থ আঙুল এবং ‘ফ্যাজিয়া’ অর্থ খাওয়া।সাধারণত শিশু বয়সে কিংবা যে বয়সে শিশুরা স্কুলে যায়, সে বয়স থেকে শুরু হয় দাঁত দিয়ে নখ কাটার অভ্যাস। বদ অভ্যাস হিসেবে প্রথমে এর শুরু হলেও ভবিষ্যতে এটি তার নিত্যদিনের আচরণে পরিণত হয়, যা বিভিন্ন ধরনের মন্দ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে। অনেক সময় আবার রাগ, হতাশা, ক্ষোভ, দুশ্চিন্তা দূর করতেই মানুষ দাঁত দিয়ে নখ কামড়ে থাকে।পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, দাঁত দিয়ে যারা নখ কাটে তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাদের অবচেতন মন থেকে এ কাজটি করে। হয়তো টিভি দেখার সময় কিংবা গভীর চিন্তার সময় এ কাজটা মনের অজান্তেই করে ফেলে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য বদ অভ্যাস হিসেবে প্রথমে এর শুরু হলেও ভবিষ্যতে এটি তার নিত্যদিনের আচরণে পরিণত হয়, যা বিভিন্ন ধরনের মন্দ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
সতর্কীকরণ :
এই বদভ্যাস দূর করার সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন মা-বাবার সহযোগিতা। তাদের নখ সময় মতো ট্রিম করে দিন।আর বড়দের বেলায় এ অভ্যাস দূর করা তো আরো সহজ। বড়দের মধ্যে এমন সমস্যা দেখা দিলে প্রথমেই স্ট্রেস দূর করতে হবে। ছেলেরা হাতে সবসময় পরতে পারেন একটা রাবারব্যান্ড। যখনই নখ কামড়ানোর জন্য হাত চলে যাবে মুখে সঙ্গে সঙ্গে সেই রাবারব্যান্ড টেনে ছেড়ে দেবেন। এভাবেই একটু একটু করে লাগতে লাগতে নখ কামড়ানোর অভ্যাস দূর হয়ে যাবে।এছাড়া মেয়ে হলে পার্লারে গিয়ে সুন্দর করে নেইল ওয়ার্ক করিয়ে আসতে পারেন। আলগা নখও লাগাতে পারেন। এতে নিজের সুন্দর নখ নষ্ট হয়ে যাবে এ বোধটা অনেক ক্ষেত্রে নখ কামড়ানো থেকে মুক্তি দেবে। তাছাড়া হাতে কিছু দিন তিতো করলার রস লাগিয়ে রাখতে পারেন। এতে হাত মুখে দেয়া মাত্র তিতো স্বাদের কারণে এর থেকে বিরত থাকবেন। এছাড়া টিভি দেখা বা পড়াশোনার সময় যদি একটা স্কুইজ বল হাতে নিয়ে স্কুইজ করতে থাকেন তাহলে হাত আর মুখে যাবে না। এছাড়া চুইংগামও চেবাতে পারেন।
( জনস্বার্থে সংগৃহীত)
0 comments:
Post a Comment