সংখ্যালঘু মুসলিম মনে সত্যিই কি বাড়ছে তৃণমূল বিরোধিতা?

 



Indiapost24 Web Desk: পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক পরিবর্তন ও রাজ্যের বাম দুর্গের অবসান ঘটাতে নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন বাংলার সংখ্যালঘু মুসলিমরা,বিশেষ করে বাঙালি মুসলিমরা ! 2011,2016 তারপর 2021 এ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে দিদির ক্ষমতায় থাকার নিঃসন্দেহে উৎস  দিদির দুঃসময়ের একান্ত সাথী এই বাঙালি মুসলিম ভোট! 2014 ও 2019 এর লোকসভা নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে নির্ভরযোগ্য ভোটব্যাঙ্ক বাঙালি মুসলিম ভোট!


 2021 বিধানসভা নির্বাচনের সেই চরম রাজনৈতিক সঙ্কট ও দুঃসময়ে মমতার দল তৃণমূলের পাশে থেকে বিজেপিকে হারিয়ে আবারও একবার বিশাল জয়ের পরও কিন্তু দিদির সমর্থন ভূমি মুসলিম-শিবিরে বিভিন্ন ঘটনাচক্রে দিনে দিনে অসন্তোষ তীব্র হতে দেখা দিয়েছে! এদিকে এরই মধ্যে কংগ্রেস-সিপিএম শিবির,আব্বাস সিদ্দিকীর আইএসএফ,দিদির নির্ভরযোগ্য সমর্থন ভূমি মুসলিম-শিবিরে আঘাত হানার অবিরত এক চেষ্টা চালাচ্ছে! 


 রাজ্যে কয়লা-গরু পাচার কাণ্ডে ইডি -সিবিআইয়ের হানা,গ্রেপ্তারি পার্থ-অনুব্রত কান্ড,নিয়োগ দুর্নীতি,আবাস যোজনার দুর্নীতি, রাহুল গান্ধীর ভারত যাত্রার ইতিবাচক প্রভাব,তৃণমূল সমর্থকদের মধ্যে চলমান সংঘর্ষ,গোষ্ঠী বিভাজন,সংঘাত পরিস্থিতি,আইনশৃঙ্খলার অবনতি প্রতিদিন উত্তপ্ত করে তুলছে,ফলত তৃণমূলের বিরুদ্ধে  একটি বড় অংশ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রত্যক্ষভাবে শাসক শিবির বিরোধিতায় বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইউটিউব চ্যানেলে সবর হয়েছে! প্রতিষ্ঠানবিরোধী এক হওয়া বাংলার অলিতে গলিতে!


কংগ্রেস ঘেষা চোরাস্রোত সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ইস্যু নিয়ে যখন কোণঠাসা হয়ে পড়েছে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন মমতা সরকার পাশাপাশি আবার যখন রাজ্যের সব বিরোধী দলগুলি নিজ নিজ রাজনৈতিক রুটি সেঁকতে শাসকদলের বিরুদ্ধে সমস্ত রকম বিরোধিতায় নেমে পড়েছে,ঠিক তখনই অপ্রত্যাশিত ভাঙ্গড় কান্ড,  আইএসএফ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও কলকাতা পুলিশের অতি সক্রিয়তার সঙ্গে বিদ্রোহ দমন নীতির ঘটনা যে ফুরফুরাগামী বাঙালি মুসলিমদের একাংশকে নিঃসন্দেহে ক্ষিপ্ত করে তুলেছে তা মানছেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরমহলও!


বাংলার কমবেশি সব অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মতে বাংলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় পীঠস্থান ফুরফুরার ভক্তরা কমবেশি গোটা বাংলা জুড়েই আছেন ফলত তার প্রভাব অনেকটাই সুদুরপ্রসারী! ফুরফুরার ভূমিপুত্র ও বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী নিয়ে সারা বাংলায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলেও তবে এখনো বয়োজ্যেষ্ঠ ফুরফুরার প্রকৃত আধ্যাত্বিক-ধর্মীয় গুরুরা এই নিয়ে কোনরকমই উচ্চবাচ্য করেননি কিন্তু তাদের এই একেবারে চুপ থাকাকে কেন্দ্র করে গোটা বাংলার ফুরফুরা ভক্তগনের মধ্যে কোথাও যেন একটা নীরব ক্ষোভের সঞ্চার ও    পাশাপাশি গোপনে দেখা দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানবিরোধী এক মনোভাব!বিভিন্ন সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় আই এস এফ এর বিদ্রোহ তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে!


 তাই ইতিমধ্যে একজন পোড়খাওয়া দক্ষ সাংগঠনিক নেত্রী হিসাবে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি বাংলার মুসলিম ভোটকে পাখির চোখ করে অসন্তোষের ক্ষতে প্রলেপ লাগাতে স্বয়ং আসরে নেমে পড়েছেন !অন্যদিকে বিরোধী দলগুলি কংগ্রেস-সিপিএম,অতি বামেরা একত্রিত হয়ে বিজেপি-আরএসএস-এর সঙ্গে দিদির গোপন আঁতাতের অভিযোগ নিয়ে প্রচার যে কিছুটা হলেও সংখ্যালঘু মনে প্রভাব ফেলেছে এবং আসন্ন পঞ্চায়েত  নির্বাচনে যে তার প্রভাব পড়তে চলেছে তা নিয়ে 100% নিশ্চিত রাজ্য রাজনৈতিক মহল!


কিভাবে মমতা ও অভিষেক রাজনৈতিক দাওয়াই এই সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে সেই হারানো মুসলিম ভোটকে একত্রিত করে বাংলার সংখ্যালঘুদের মন জয় করে আবারো তাদের তৃণমূল স্রোতে ফিরিয়ে এনে আসন্ন 2023 এর পঞ্চায়েত ভোট মোকাবেলা করে সেদিকে তাকিয়ে গোটা বাংলা!!

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment