বৈশাখী গোস্বামী: গত বছর ডিসেম্বরে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৈঠক করেন। বৈঠকে একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকার বিষয়ে আলোচনা হয়। ঘদিও এখনও পর্যন্ত এ রাজ্যে একশোদিনের কাজের জন্য কোনো টাকা এসে পৌঁছায়নি। এরমধ্যে একশো দিনের বকেয়া টাকা-সহ কেন্দ্রের বিভিন্ন ইস্যুতে বঞ্চনার প্রতিবাদে গত শুক্রবার থেকে রেড রোডে ধর্ণা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ধর্ণার দ্বিতীয় দিনে ধর্ণা মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা করেন। তিনি জানান, 21 লক্ষ মানুষের বকেয়া টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে 21 শে ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
এদিকে আজ সকাল থেকে রাজ্যের একাধিক জায়গায় অভিযান চালায় ইডি। এই প্রথম একশো দিনের কাজের দুর্নীতির মামলায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয় ইডি। বহরমপুর, চুঁচুড়া, ঝাড়গ্রাম, চন্দননগর সল্টলেক সহ ছ' জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীসহ পৌঁছে যান ইডি আধিকারিকরা। ঝাড়গ্রামের বাছুর ডোবায় সরকারি আবাসনে ইডির ছয় সদস্যের দল পৌঁছে যান। বহরমপুরের সাসপেন্ড হওয়া পঞ্চায়েত আধিকারিকের বাড়িতেও তল্লাশি করা হয়। কেন্দ্রীয় বাহিনী দ্বারা এলাকা ঘিরে চালানো হয় চিরুনি তল্লাশি। অন্যদিকে, সল্টলেকে প্রাক্তন বিডিও -র দুটি ফ্ল্যাটেও অভিযান চলে। ইডি-র পক্ষ থেকে জানা যায় একশো দিনের কাজের দুর্নীতির অভিযোগে এফ .আই. আর করা হয়েছে ধনিয়াখালি এবং মুর্শিদাবাদের বেলডাঙায়। তার ভিত্তিতেই চলে এই তল্লাশি।
তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ড. শান্তনু সেন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চাপেই রাজ্যে ইডি সিবিআইয়ের তীব্রতা বেড়ে গেল। তিনি আরও বলেন তদন্ত করার নামে চলছে প্রহসন।
অন্যদিকে, রাজ্যের নারী, শিশু এবং সমাজকল্যাণমন্ত্রী ড. শশী পাঁজা বলেন, গতকাল অর্থাৎ সোমবার শুভেন্দু অধিকারীর দিল্লিতে বিভিন্ন নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন। যার ফলস্বরূপ মঙ্গলবার সকাল থেকেই রাজ্যে ইডির হানা শুরু হয়েছে । তিনি এ ও বলেন যে, যখন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে তিনি শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা দেবেন, তখন থেকেই বিজেপি তার প্রতিহিংসামূলক রাজনীতিতে আরও বেশি করে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এ রাজ্যে বিজেপি 21 লক্ষ শ্রমিককে তাদের মজুরি থেকে বঞ্চিত করেছে। অন্যদিকে বিজেপি-শাসিত উত্তরপ্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশে, যেখানে পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় দ্রুত বেশি জব কার্ড মুছে ফেলা হলেও তাদের জন্য তহবিল অবরুদ্ধ করা হয়নি। তৃণমূল মহিলা কংগ্রেসের ধর্ণা মঞ্চ থেকে তিনি আরও দাবি করেন যে কোথাও গিয়ে ইডি , সিবিআইকে পরিচালনা করছে কেন্দ্রীয় সরকার।
তবে শুভেন্দুর অ্যাকশন বলার পরই কি ইডির তৎপরতা এ রাজ্যে ? এসবের মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস মনে করছে, লোকসভা ভোটের পূর্বে এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র ।
0 comments:
Post a Comment