স্টাফরিপোর্টার ২মার্চ ,কলকাতা :পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি'র জয়ের সম্ভাবনা নাকচ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল কংগ্রেস নির্বাচনী কৌশলবিদ প্রশান্ত কিশোরের আইপ্যাক সংস্থা জানিয়েছেন যে, বিধানসভা নির্বাচনে তৃতীয়বার বিশাল জনসমর্থন নিয়ে আবার ক্ষমতায় ফেরা নিশ্চিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আই প্যাক সংস্থার কর্ণধার প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া সর্বশেষ রিপোর্টে দাবি করেছেন যে, তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট 1 শতাংশ কমলেও নিশ্চিতভাবে 190র মতো আসন লাভ করবে। 2016 তুলনায় 21 টি আসন হারাতে হতে পারে তৃণমূলকে। আইপ্যাকের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে যে 2019 এর লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় নাকি বিজেপির 8 শতাংশ ভোট কমবে। প্রশান্ত কিশোরের দাবি যে বিজেপি 32 শতাংশ ভোট ও 85 থেকে 90 টি আসন পেতে পারে। উত্তরবঙ্গ ও জঙ্গলমহলে লোকসভায় পাওয়া পুরো জনসমর্থন ও ধরে রাখতে পারবে না বিজেপি।
লক্ষ্যণীয়ভাবে পশ্চিমবঙ্গের হাই ভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনের আগেই প্রতিবেদনে কংগ্রেস ও বামপন্থী শিবিরের ভোটের অংক রীতিমতো বাড়ার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।লোকসভায় দু'দল মিলিত ভাবে যেখানে 13 শতাংশের কাছাকাছি ভোট পেয়েছিল এবার তা 20 থেকে 22 শতাংশে পৌঁছে যাবে। তবে বাম কংগ্রেস জোট বড় জোর 11 থেকে 15 টি আসন পেতে পারে। লোকসভা নির্বাচনে বাম ও কংগ্রেস সমর্থকদের যে অংশ বিজিপিতে ভোট দিয়েছিল তাদের 8 থেকে 9 শতাংশ আবার বাম-কংগ্রেস শিবিরের দিকে ফিরে যেতে পারে। একাধিক জেলায় বাম-কংগ্রেস জোট ভালো ভোট পেলেও তা আসলে রূপান্তরিত হবে না। তবে বাম কংগ্রেসের প্রাপ্ত ভোট বিজেপির জয় ঠেকাতে তৃণমূল কংগ্রেসের অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। তবে কংগ্রেস ও বামপন্থী নেতাদের বিধানসভা নির্বাচনে জোট নিয়ে আলোচনা হলেও তা তেমন দানা বাঁধেনি। এর বড় কারণ প্রদেশ কংগ্রেসের বড় অংশই বামেদের সঙ্গে জোট বিরোধী মনোভাব। দেবপ্রসাদ রায়, নেপাল মাহাতো, শুভঙ্কর সরকার সহ একাধিক নেতা বামেদের সঙ্গে জোটের তীব্র বিরোধী। তারা তৃণমূলের সঙ্গেই বিজেপিকে ঠেকাতে সীমিত আসনে রাজনৈতিক সমঝোতায় যেতে চাইছেন। অধীর চৌধুরীর কাছে মমতা শিবির রাজনৈতিক সমঝোতার গোপন বার্তা দিয়েছেন বলে প্রকাশ। এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। আরো বলেন আব্বাস সিদ্দিকী ও মমতার মধ্যে রয়েছে এক গোপন সমঝোতা ।
কংগ্রেস মালদহ, মুর্শিদাবাদ, উত্তরদিনাজপুর, পুরুলিয়ার মত জেলায় 80 থেকে 90 শতাংশ আসনে লড়তে চাইছে। ফলে আসন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হতে পারেনি। আব্বাস-কংগ্রেস মতো পার্থক্যে এতে বাম-কংগ্রেস জোট এর ভবিষ্যত নিয়ে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক মহলে সংশয় তৈরি হয়েছে। কংগ্রেসের জাতীয় নেতৃত্ব সর্বভারতীয় স্তরে বামেদের বন্ধুত্বকে মর্যাদা দেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির করার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা যে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি দুর্বল তা সর্বজনবিদিত।কংগ্রেস হাইকমান্ডের নানা বিবৃতিতে বিভ্রান্ত প্রদেশ কংগ্রেস মহল।কংগ্রেস হাইকমান্ড বামেদের সঙ্গে জোটে সবুজ সংকেত দিলেও এখনো ধীরে চলতে চান।পশ্চিমবঙ্গে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস নয় যে কোনো মূল্যে বিজেপিকে হারানোই কংগ্রেস হাইকমান্ডের রাজনৈতিক কৌশল। তাই পর্যবেক্ষক মহল মনে করছেন যে লোকসভা নির্বাচনের অনুকরণে বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-বামেদের ত্যাগ করে শেষ মুহূর্তে তৃণমূলের সঙ্গে গোপন মিতালীতে যেতে পারে। ফলে যতই জোটের বিগ্রেড তুলে ধরা হোক জোট নিয়ে সংশয় অব্যাহত রয়েছে।
0 comments:
Post a Comment