রাহুল নয়,মল্লিকার্জুনকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী করার প্রস্তাব মমতার,সমর্থন কেজরীর

 


Prabir Panja,Indiapost24 Web Desk:প্রথম বৈঠক হয়েছিল পাটনায়। তার পর বৈঠক হয় বেঙ্গালুরু এবং মুম্বইয়ে। চতুর্থ বারের জন্য বৈঠকের আসর বসল দিল্লিতে। দেশে তৈরি হওয়া বিজেপি বিরোধী জোট INDIA'র চতুর্থ সেই বৈঠক এখন চলছে দিল্লির অশোকা হোটেলে। ২৪'র ভোটযুদ্ধে জোট শরিকদের মধ্যে আসন রফা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতেই এই মিটিং।


লোকসভা ভোটে রাহুল গান্ধীকে প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী করার ব্যাপারে লালু প্রসাদের আগ্রহ রয়েছে। এ ব্যাপারে ডিএমকে নেতা তথা তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ও শিবসেনা নেতা উদ্ধব ঠাকরেও ভিন্নমত নন। কিন্তু মমতার প্রস্তাবের স্পষ্ট অর্থ হল, প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী করা হোক গান্ধী পরিবারের বাইরে কাউকে। তা সে কংগ্রেস থেকে হোক ক্ষতি নেই।


সূত্রের খবর, এদিনের বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মল্লিকার্জুন খার্গে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। সংসদীয় রাজনীতিতে তাঁর অভিজ্ঞতা রয়েছে। কেন্দ্রে মন্ত্রী ছিলেন। রাজ্যসভায় এখন বিরোধী দলনেতা। তাঁকেই প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী করা হোক।


জানা গিয়েছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়াও অরবিন্দ কেজরিওয়ালও এদিন মল্লিকার্জুনের নাম প্রধানমন্ত্রী পদ প্রার্থী হিসাবে প্রস্তাব করেন। ঘটনা হল, এদিনের বৈঠকের আগে সোমবার  মমতা-কেজরিওয়াল বৈঠকে বসেছিলেন। তা ছাড়া এদিন সকালে সপা নেতা অখিলেশ যাদবের সঙ্গে বৈঠক সারেন  মমতা। 


কর্ণাটকের ৮১ বছরের খাড়গে কংগ্রেসের দলিত মুখ। গত বছর দলীয় নির্বাচনে শশী থারুরকে হারিয়ে কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচিত হন খাড়গে। গত ২৪ বছরে গান্ধী পরিবারের বাইরে তিনিই প্রথমবার কংগ্রেসের সর্বোচ্চ পদে বসেন!দলিত,ওবিসি অধুষ্যিত আসনগুলিতে বিজেপি দারুণ ফল করছে। বিজেপিকে রুখতে তাই দলিত মুখেই ভরসা করছেন মমতা। 

তৃণমূলের সাফ কথা ৩১ ডিসেম্বর তথা নতুন বছর শুরু হওয়ার আগেই সব রাজ্যে জোটের শরিকদের মধ্যে আসন বন্টন সূত্র চূড়ান্ত করে ফেলতে হবে।


কংগ্রেসের তরফে আশা করা হয়েছিল,হিন্দিবলয়ের তিন রাজ্যের ভোটে ভাল ফল করবে কংগ্রেস। দুটো রাজ্যে অন্তত তাঁরা সরকার গড়বেন। সেই সঙ্গে তেলঙ্গনাতেও ভাল হবে। তাতে ইন্ডিয়া জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন রফায় কংগ্রেস দর কষাকষির সুযোগ পাবে। কিন্তু হিন্দিবলয়ের তিন রাজ্যেই কংগ্রেস হেরেছে। তার ফলে উল্টে এবার শরিকরা কংগ্রেসের উপর চাপ তৈরির সুযোগ পেয়ে গেছে।


এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে যে রাজ্যে যে দল শক্তিশালী তারাই আসন বন্টনের সূত্র খোঁজার উদ্যোগ নেবে। যেমন উত্তরপ্রদেশে সপা তথা অখিলেশ যাদব কংগ্রেসের তুলনায় শক্তিশালী। তাই উত্তরপ্রদেশে উদ্যোগ নেবে সপা। আবার পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের তুলনায় শক্তিশালী। তাই বাংলার আসন বন্টন নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নেবে অভিষেকরা। 


কংগ্রেস আবার আসন বন্টন নিয়ে আলোচনার জন্য এদিন আবার পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটিতে রয়েছেন প্রাক্তন দুই মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলট, ভূপেশ বাঘেল। সেই সঙ্গে রয়েছেন সলমন খুরশিদ, মোহন প্রকাশ ও মুকুল ওয়াসনিক।


তবে এ দিনের বৈঠকে আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ৩০ জানুয়ারি থেকেই বিরোধীদের যৌথ প্রচার শুরু হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি সংসদ থেকে একসঙ্গে প্রায় দেড়শো সাংসদকে বহিষ্কারের প্রতিবাদেও আগামী ২২ ডিসেম্বর গোটা দেশ জুড়ে আন্দোলনে নামবে ইন্ডিয়া জোটের শরিক দলগুলি। ইভিএম থেকে একশো শতাংশ ভিভিপ্যাট বের করার দাবি নিয়েও আন্দোলনে নামবে বিরোধী শিবির।


রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, ঘরোয়া আলোচনায় কংগ্রেসের ওপর প্রকারন্তরে বাড়তি চাপ তৈরির কৌশল নিচ্ছে জোটের শরিক আঞ্চলিক দলগুলি। সেকারণেই এদিন গান্ধী পরিবারের বাইরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে খাড়্গের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে। কংগ্রেসকে চাপে রেখে বাড়তি আসন আদায়ের কৌশলও মনে করছেন অনেকে।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment