মমতাকে লোকসভার আসন ভিত্তিক মূল্যায়ন জমা আই- প্যাকের

 



Indiapost24 Web Desk:তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা

বন্দ্যোপাধ্যায়কে ২৪-এর লোকসভা নির্বাচন নিয়ে আগাম সতর্কবার্তা দিল দলের নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণকারী সংস্থা আই প্যাক। কাগজে কলমে প্রশান্ত কিশোরের সংগে আই প্যাকের সরকারি ভাবে যোগাযোগ না থাকলেও এর পিছনে প্রশান্ত  কিশোরের কুশলি চাল দেখছেন রাজনৈতিক মহল।

পিকে গোপনে মোদী-শাহদের হয়ে ব্যাটিং করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এরই মাঝে আই প্যাক লোকসভার নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ৪২ আসন ধরে ধরে মমতাকে তাদের মূল্যায়ন পাঠিয়েছে।

তৃণমূলের দলীয় সূত্র আই প্যাকের রিপোর্ট সামাজিক মাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। এই রিপোর্টে আই প্যাক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হলে বা না হলে আসন ভিত্তিক মূল্যায়ণ দেখানো হয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গে জোট হলেই যে তৃণমূলের বেশি আসন দখলের রাজনৈতিক সম্ভাবনা তাও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। কংগ্রেসের সঙ্গে জোট পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিম ভোট প্রায় সবটাই চলে যাবে তৃণমূলের দিকে। অন্যদিকে জোট না হলে রাজনৈতিক লাভ ওঠাবে বিজেপি এমনটাই মমতাকে দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট হলে উত্তর কলকাতা, দক্ষিণ কলকাতা, হাওড়া, উলুবেড়িয়া, যাদবপুর, মথুরাপুর, জয়নগর, ডায়মন্ড হারবার, বারাসাত, দমদম, ব্যারাকপুর, ঝাড়গ্রাম, কৃষ্ণনগর, মুর্শিদাবাদ, জংগিপুর, বহরমপুর, মালদহ দক্ষিণ বর্দ্ধমান-দূর্গাপুর, আসানসোল, হুগলি, বাঁকুড়া, বীরভূম, বোলপুর, ঘাটাল, জলপাইগুড়ি, মেদিনীপুরে বিজেপির পরাজয় ঘটবে বলে আই প্যাকের পর্যবেক্ষণ। অন্যদিকে তৃণমূল একক লড়াই করলে হুগলি, শ্রীরামপুর, আরামবাগ, দমদম, বনগাঁ, রাণাঘাট, কৃষ্ণনগর, কাঁথি, তমলুক, মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাকুড়া, বিষ্ণুপুর, উত্তর মালদহ, দক্ষিণ মালদহ, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, বালুরঘাট, রায়গঞ্জ, কোচবিহারের ২২-২৩টি আসনে এডভান্টেজ পাবে বিজেপি। জোট না হলেও বাম-কংগ্রেস-আই এস এফের জোট হলে কংগ্রেস বহরমপুর জিতবে। সি পি এম, আই এস এফ কোন আসন জিতবে না। তবে তৃতীয় জোটের কাটা ভোটে বিজেপির চেয়ে তৃণমূল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আই প্যাকের প্রতিবেদন তৃণমূল জোট না করলে ও তার প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস- বামপন্থী দল-আই এস এফের জোট হলে রাজনৈতিক গুণাগার দিতে হবে তৃণমূলকে। আই প্যাকের তথ্য বিজেপি নওশাদ সিদ্দিকিকে আই এস এফ প্রার্থী হিসাবে ডায়মন্ড হারবারে দাঁড় করাতে প্রভাব খাটাচ্ছে। বিজেপির লক্ষ্য নওশাদ ঐ কেন্দ্রে মুসলিম সংখ্যালঘু ভোট ভাগ বসান। আখেরে এতে বিজেপির রাজনৈতিক লাভ হতে পারে। আই প্যাক তাদের প্রতিবেদনে কংগ্রেস-তৃণমূল জোট হলে সম্ভাব্য কি ফল হতে পারে তা জানানোর পাশে কংগ্রেস-বাম-আই এস এফ জোট হলে বিজেপি কতটা রাজনৈতিক লাভ ওঠাতে পারে ও তৃতীয় জোটের সম্ভাব্য আসন সংখ্যা, ভোট প্রাপ্তির শতকরা অংশ নিয়েও প্রতি কেন্দ্রের ভিত্তিতে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন। আই প্যাকের রিপোর্ট সিপিএম যুবদের ইনসাফ যাত্রার পরও রাজ্যে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতায় ভোটে সামান্য অংশই পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবংগে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোটের প্রায় ৯০ শতাংশই বিজেপির দিকে চলে যেতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের অনুমান। আই প্যাক শতাংশের হিসাব না দিলেও তারা মনে করে প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট কন্ডা করার লক্ষ্যেই এগিয়ে

পশ্চিমবঙ্গের গেরুয়া শিবির।আই প্যাকের অনুমান শেষ পর্য্যন্ত এই রাজ্যে ইন্ডিয়া জোটের প্রধান শরিক দল কংগ্রেসের সংগে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের জোট বাস্তবায়িত হলে পুরোপুরি সেফ জোনে থাকবে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপির চলতি ১৬টি আসনও তারা ধরে রাখতে পারবে না।

এদিকে রাজনৈতিক মহল মনে করছেন যে পশ্চিমবঙ্গেও আরএসএসের প্রত্যক্ষ সহায়তায় বিজেপি রাম আবেগ, হিন্দুত্বের ভাবাদর্শ ও ধর্মীয় বিভাজনকে উস্কে দিতে চাইবে। বিজেপি-তৃণমূলের মেরুকরণের রাজনীতিতে ঘাক্কা খাবে বাম শিবির। সিপিএমের অধিকাংশ প্রার্থীই ১৯-র নির্বাচনের মত আমানত খোয়াবেন। কোন আসন জেতাও অধরা থেকে যাবে। বামেদের চেয়ে কংগ্রেসের অবস্থা নড়বড়ে হলেও তাদের তুলনামূলক ক্ষতি কম হবে।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment