ভারত রত্নেও ভোটের রাজনীতি?





Indiapost24 Web Desk:২৪-এর আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান 'ভারত রত্ন' প্রদানেও ভোটের রাজনীতির পরিকল্পিত ছবির অভিযোগ উঠতে শুরু করেছে ইন্ডিয়া জোটের তরফে। প্রথমে বিহারের সোশ্যালিষ্ট আন্দোলনে প্রয়াত অনগ্রসর শ্রেনীর নেতা কর্তৃরী ঠকুরকে ভারত রত্ন দেওয়ার ঘোষণা করে মোদী ইন্ডিয়া জোটে ভাঙ্গন তৈরী করছেন। ওবিসি শ্রেনীর কর্মী নেতা নীতিশ কুমার, লালুপ্রসাদ যাদব- কংগ্রেসের সংগ ত্যাগ করে আবার বিজেপির রাজনৈতিক জোট এনডিএ তে দিয়ে আসেন। লোকসভা নির্বাচনের আগে বিহারে রাতারাতি ইন্ডিয়া জোট সরকারের পতন, এন ডি এ জোট রাজ্য সরকারের ক্ষমতা লাভ ঘটে।

কর্পূরী ঠাকুরকে ভারত রত্ন প্রদান ও নীতিশ কুমারের সংযুক্ত জনতা দলের এন ডি এতে প্রত্যাবর্তন বিহার রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটিয়েছে। এর পরই উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লির জাঠেদের সমর্থন আদায়ে আবার মাষ্টার স্ট্রোক দিলেন নরেন্দ্র মোদী। এবার জাতীয় রাজনীতি জাঠেদের প্রধান নেতা প্রয়াত চৌধুরী চরণ সিংকে মরণোত্তর ভারত রত্ন সম্মানে ঘোষণা করা হল। জাঠ বলয়ে এর দারুন প্রভাব পড়েছে। চৌধুরী চরণ সিংয়ের নাতি জয়ন্ত চৌধুরী তারই ঠাকুর্দার প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রীয় লোকদলকে বিজেপি জোটের দোসর করতে চলেছেন। বিহারে মুসলিম-যাদব জাতি সমীকরণের কত চৌধুরী চরণ সিংএর তৈরি জাঠ-মুসলিম জোট সমীকরণও পশ্চিম উত্তর প্রদেশে ধাক্কা খেতে চলেছে।

মোদী সরকার জাঠদের নিজেদের দিকে টানতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। চৌধুরী চরণ সিংকে ভারত রত্ন দেওয়া সেই রাজনীতিরই সমীকরণ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। লোকসভা নির্বাচনে জাঠ সমর্থক ফিরে পেতেই যে গেরুয়া শিবিরের এই কৌশল তা কবুল করেছেন গেরুয়া শিবিরের তান্ত্রিক নেতারা।

ভারত রত্ন প্রদানে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী পি ভি নরসীমা রাও ও কৃষি বিজ্ঞানী ডঃ স্বামীনাথকে সম্মান দেওয়ার পিছনে মোদী সরকারের দীর্ঘ মেয়াদী কৌশল কাজ করছে বলেই মনে করা হচ্ছে। নরসীমা রাওকে কংগ্রেস রাজনীতিকে ব্রাত্য করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী সহ গান্ধী পরিবার সহ কংগ্রেস নেতারা। এমন কি তার মৃত্যুর পর গান্ধী পরিবার কংগ্রেস নেতারা শ্রদ্ধা অর্পনও করেন নি। তেলেঙ্গানায় এ নিয়ে তেলেগু জাত্যাভিমানে আঘাত লাগে নরসীমা রাওকে মরণোত্তম ভারত রত্ন দেওয়ার ঘোষণা করে যে মোদী কংগ্রেস নেতৃত্ব, বিশেষ করে গান্ধী পরিবারকে প্রবল রাজনৈতিক অস্বস্তিতে ফেলেছেন তা নিয়ে সহমত পোষণ করেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। নির্বাচনের বছরে ভারত রত্ন ঘোষণায় যে রাজনৈতিক কৌশল রয়েছে তা অস্বীকার করেন নি হেরুয়া শিবিরের নেতারা। কংগ্রেস দল ও পরবর্তী সময়ে ইউ পি এ শাসনকালে কর্সরী ঠাকুর, চরণ সিং, নরসীমা রাও-দের কথা মনে পড়ে নি কংগ্রেস নেতাদের। তবে সুচতুর কৌশলে নির্বাচনের বছরে যে মোদী এ নিয়ে বাজিমাত করতে চাইছেন তা বলাই বাহুল্য।

কর্পূরী ঠাকুর ভারতরঙ্গে সম্মানিত হলেও তার রাজনৈতিক গুরু রাম মনোহর লোহিয়া উপেক্ষিতই থেকে গেলেন। সমাজবাদী আন্দোলনের অন্যতম তাত্বিক পথিকৃৎ আচার্য্য নরেন্দ্র দেও-কে উপেক্ষা করা হয়েছে। জাতি সমীকরণ ও ভোটের রাজনীতি মাথায় রেখেই যে মোদী কর্তৃরী ঠাকুর, চরণ সিং,নরসীমা রাওদের মরণোত্তর ভারত রত্ন প্রদানে এগিয়েছে তা মানছেন রাজনৈতিক মহলের বড় অংশই।

Share on Google Plus Share on Whatsapp



0 comments:

Post a Comment