Indiapost24 Web Desk:পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিরোধী দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারি বিজেপি ছেড়ে নতুন আঞ্চলিক দল গড়তে চাইছেন বলে নানা সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চলছে। এ নিয়ে শুভেন্দুর ঘনিষ্টজনেরা প্রতিক্রিয়াও দেন নি। সম্প্রতি কলকাতায় বিজেপির বর্দ্ধিত রাজ্য কর্মসমিতির বৈঠকে যেভাবে শুভেন্দু অধিকারী হিন্দুত্বের হার্ডলাইন তুলে ধরেন তা নিয়ে ইতিমধ্যেই দ্বিধাবিভক্ত বিজেপি। যদিও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের কট্টরপন্থীরা, এমন কি সংঘ ঘনিষ্ঠ ত্রিপুরা-মেঘালয়ের প্রাক্তন রাজ্যপাল তথাগত রায় শুভেন্দু অধিকারীর হিন্দুত্বের হার্ডলাইনকে সমর্থন করেছেন। ভারত সেবাশ্রম সংঘের মুর্শিদাবাদ বেলডাংগা আশ্রমের কার্তিক মহারাজ প্রকাশ্য বিবৃতি দিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর হিন্দুত্ববাদী হার্ডলাইনকে সমর্থন করেছেন। সংঘ পরিবারের সংগঠন বিশ্ব হিন্দু পরিষদও তাকে সমর্থন জোগাচ্ছে।
২১-এ পশ্চিমবঙ্গে সুবর্ণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসতে পারে নি। এবারও লোকসভা নির্বাচনে প্রত্যাশা তৈরি করে ভোটের শতাংশ ১২ আসনেই থামতে হয়েছে বিজেপিকে। সংগঠনের খারাপ অবস্থা, বুথস্তরে সংগঠন না থাকা, দলের মধ্যে আদি-নব্য সংঘাত ও নাশকতার কারণেই বিজেপি আরামবাগ, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, কৃষ্ণনগর, উত্তর কলকাতা, দমদম, কোচবিহারের মত আসন হেরেছে।
বিজেপির অন্দরে রাজ্য থেকে তৃণমূলস্তর পর্য্যন্ত অর্থ নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছে। আরামবাগে জেলার শীর্ষ নেতা ও বিধায়ক চার কোটি টাকার বিনিময়ে নাশকতা করে দলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন বলে অভিযোগ এই কেন্দ্রে বিক্ষুব্ধ বিজেপি প্রার্থী ১৬ হাজার ভোট পান। মাত্র ৬ হাজার ভোটে বিজেপিকে হারতে হয়েছে।
২৬-এর বিধানসভা নির্বাচনে জিততে হলে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার মত বঙ্গেও হার্ডলাইন নিতে হবে। অসমে ৪০ শতাংশ মুসলিম সমর্থন ছাড়াই ক্ষমতায় এসেছেন হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। অসমীয়া, বাঙ্গালী, হিন্দীভাষী হিন্দু, নেপালি, চা উপজাতিদের একজোট করে এই অসাধ্য সাধন করেছেন উত্তর-পূর্বে গেরুয়া শিবিরের মুখ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দল নেতা শুভেন্দু অধিকারীও সেই লাইনের পক্ষে। পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ৩২ শতাংশ মুসলিমদের বাদ রেখেই বাকি ৬৮ শতাংশকে টার্গেট করার পকশপাতি শুভেন্দু অধিকারী।
এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল ৪৭ শতাংশ, বিজেপি ৩৯ শতাংশ, বাম-কংগ্রেস জোট ১২ শতাংশ ভোট পায়। শুভেন্দুর কৌশল বিজেপির ৩৯ শতাংশ ভোট অব্যাহত রেখে তৃণমূল থেকে ৩ শতাংশ ভোট পেলেই বঙ্গে বাজিমাৎ সম্ভব। এজন্যই তিনি হিন্দুত্বের হার্ডলাইনার হতে চাইছেন। বিজেপি ছেড়ে নতুন আঞ্চলিক দল তৈরির প্রশ্নে সামাজিক মাধ্যমে জল্পনার পিছনে মূলতঃ তৃণমূল কংগ্রেসের আই টি সেলের হাত দেখছেন শুভেন্দুর ঘনিষ্ঠজনেরা। গেরুয়া শিবিরে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরিই এর লক্ষ্য বলে অনুমান করা হচ্ছে।
0 comments:
Post a Comment