প্রবীর পাঁজা:মানুষের মতামত::বর্তমানে পশ্চিমবাংলার রাজনৈতিক আঙ্গিনায় শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক সমস্ত মানুষের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে নামটি বারংবার উঠে আসছে তিনি আর কেউ নন প্রাক্তন আমলা তথা বিস্ফোরক তথ্যে ভরপুর "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে যেমন দেখেছি" বইয়ের বলিষ্ঠ লেখক দীপক ঘোষ!"মানুষের মতামত" এর প্রশ্ন-উত্তরের পর্বে এখনও মমতার প্রখর সমালোচক, নিঃসন্দেহে বিতর্কিত
বলিষ্ঠ এই লেখক,অনেক সমালোচনার মধ্যেও কিন্তু তিনি অকপটে স্বীকার করলেন বর্তমানে বাংলায় মমতার বিকল্প কোন মুখ নেই। আজও মানুষের ভালবাসা আশীর্বাদ নিয়ে মমতাই বাংলার রাজনীতিতে সর্বোচ্চ স্থানে আছে।
তাই এটা বলা বাহুল্য,মানুষের ভালোবাসা সমর্থন না থাকলে ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির মত রাজনৈতিক দলের হাতি- ঘোড়ার দূরন্ত গতিকে তৃণমূলের ঘাসফুলের হাওয়ায় প্রতিহত করা সম্ভব হতো না। ভোটের লড়াইয়ে নামার আগে তৃণমূল দল ভাঙ্গার কারণে কিছুটা সমস্যায় থাকলেও তরুণ সংসদ অভিষেক ব্যানার্জীর দেওয়া রাজনীতির মুক্ত অক্সিজেন বহুল অংশে তৃণমূল দলকে উজ্জীবিত করেছিল তার সাক্ষী হয়ে রয়েছে গোটা বাংলা।নবীন নেতা অভিষেকের রাজনৈতিক শক্তি প্রবীণ রাজনীতিবিদদের নতুন শক্তি নিয়ে ভোটের লড়াইয়ে পথ দেখিয়েছিল। মমতা-অভিষেকের যৌথ নেতৃত্ব বিজেপিকে ৭৭ আসনে বেঁধে রেখেছিল। বিরোধী দল কংগ্রেস এবং সিপিএমকে শূন্য থেকে শুরু করার নিমন্ত্রণ পাঠিয়েছে যদিও সাগরদিঘী উপ নির্বাচনে কংগ্রেস এখনও এক পায়ে দাঁড়িয়ে।
মমতা প্রবর্তিত প্রকল্পগুলি জনমুখী না জন বিরোধী তা বাংলার আপামর মানুষ বিচার করবে। আজকের আবাদ ভবিষ্যতের ফসল। দীপক বাবুর কথায় জনসংযোগী মমতার জুড়ি মেলা ভার। সর্বভারতীয় যুব কংগ্রেসের সভাপতি থাকার সময় যেভাবে গ্রামে গঞ্জে ও শহরের জনসংযোগ করে ছিল এবং যে মন্ত্রে মানুষের হৃদয় জয় করেছিল ও চাষ করেছিল সেদিনের সেই অতীতের ফসল আজ শত বাধা বিঘ্নের মধ্যেও ঘরে তুলছে মমতা!পরবর্তীকালে,সিঙ্গুর আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে তার রাজনৈতিক জয় প্রকাশ করেছিল তার জনসংযোগের ভূমিকা। রাজনীতির তৈলাক্ত পথে মমতার সচ্ছন্দ গতি আজও অব্যাহত।
পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী পক্ষ গুলি সম্পর্কে কিছুটা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হতেই তিনি বললেন আজ থেকে পঞ্চাশ ষাট বছর আগে গ্রামবাংলায় কোন কোন ছোট চায়ের দোকানে চায়ের আড্ডায় হত অনেক রাজনৈতিক আলোচনা-সমালোচনা যা ছিল বাংলার এক পুরানো রাজনৈতিক সংস্কৃতি । তবে ইদানিং কালে বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ বাংলায় শুরু করেছে "চায়ে পে চর্চা"যাকে রাজনৈতিক জনসংযোগ বলা হচ্ছে তা কি সত্যিই তাই না দলীয় সংযোগের প্রচেষ্টা মাত্র সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
লাল পাটি তো লাল সিগনালে দাঁড়িয়ে গেছে কবে সিগন্যাল খুলবে জানা নেই।তাদের রাজনৈতিক নেতৃত্ব আর এখন আগে যেতে পারবে কিনা তা তারা নিজেরাও জানে না।
পশ্চিমবঙ্গ কংগ্রেসের করুন অবস্থা। ভালো নেতার অভাবে এবং রাজনৈতিক পুষ্টির অভাবে শতাব্দি প্রাচীন দলটা ধুঁকছে। প্রদেশ কংগ্রেসে একা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ছাড়া কোন নেতা বর্তমানকালে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ছটফট করছে বটে কিন্তু দলবদ্ধ লড়াই নেই।
বর্তমানে সংঘবদ্ধ বা একক ভাবে হোক,কে বা কারা করবে পলিটিকাল ব্যাটেল টু মমতা? কোথায় বিরোধী শক্তি? এইসব প্রশ্নের উত্তর সঠিক জানা নেই, কারণ মমতার কোন বিকল্প নেই।খাঁচায় বন্দি বিরোধী শক্তি মুক্ত মতাকে ধরতে পারবে কি? প্রশ্ন থেকেই যায়।
0 comments:
Post a Comment