Nibaran Chakroborty,Indiapost2:
পুজোয় বন্যা বিধস্ত এলাকার মানুষের পাশে থাকুন মন্ত্রীরা, মন্ত্রিসভার বৈঠকে এমনটাই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উৎসবের এমন পরিবেশেও যে তার নজর রয়েছে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকাতে, মন্ত্রিসভার বৈঠকে সে কথা বারবার তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আরজিকর কান্ডের জেরে এবারের শারদোৎসব পরিচালনা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে বড়সড় চ্যালেঞ্জ। সুষ্ঠু পরিবেশে যাতে কলকাতার পূজো অনুষ্ঠিত হয় সেই কারণে 'রাফ এন্ড টাফ' পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মাকে নিয়োগ করেছেন মমতা। কিন্তু তাতেও রাজ্য প্রশাসনের বড় কর্তারা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না, যে ভালয় ভালয় মিটে যাবে বাংলার সেরা পার্বণ। উৎসবের আবহে যাতে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সরকারের মুখ না পোড়ে। তাই শারদোৎসবে মন্ত্রীদের বন্যা বিধ্বস্ত মানুষের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। পুজোর আগে রাজ্যের একাধিক জেলায় বন্যা হয়েছে।
সোমবার ৩০ সেপ্টেম্বর নবান্নে ছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। রবিবার উত্তরবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে সেখানে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে ফিরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি উঠে। পুজোয় বন্যা বিধ্বস্ত মানুষকে পর্যাপ্ত ত্রাণ সাহায্য পৌঁছে দিতে প্রশাসনকে তৎপরতার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীদের উৎসবের থেকে বেশি করে বন্যা বিধ্বস্ত মানুষের পাশে থাকার কথা বলেছেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী মন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন মানুষগুলির জনজীবন বন্যার কারণে বিধ্বস্ত তাদের পাশে থাকুন। বিশেষ করে সেই সমস্ত মন্ত্রীরা যাদের জেলায় বন্যা হয়েছে তাদের জন্য বেশি করে সময় দিন। যে সমস্ত জেলায় বন্যা হয়নি সে সমস্ত জেলার মন্ত্রীদেরও বন্যা বিধ্বস্ত এলাকার মানুষের জন্য ত্রাণ সামগ্রী সংগ্রহ এবং সাহায্যের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এই মুহূর্তে রাজ্যের বিস্তীর্ণ এলাকা বন্যা কবলিত। লাগাতার বৃষ্টি তারপর জল ছাড়ার কারণে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিতিতে আগেই দক্ষিণবঙ্গের জেলার পর জেলা ছিল জলের তলায়। গত কয়েকদিনে সিকিম পাহাড়ের জলে একই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। তাই দলীয় নেতা-মন্ত্রীদের ও আরও বেশি করে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকায় সময় দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
উৎসবের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে দায়িত্ব নিয়েই কলকাতার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠক করেছেন কমিশনার মনোজ। বুঝিয়েছেন যে কোনও পরিস্থিতিতে পূজো কমিটিগুলির পাশে থাকবে কলকাতা পুলিশ। আরজি কর-কান্ডকে ঘিরে যেভাবে উত্তেজনার প্রহর গণনা করে চলেছে কলকাতাবাসী, তাতে উৎসবের প্রতি মুহূর্তে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও বিনিদ্র রজনী যাপন করতে হতেই পারে। এমনটাই মত প্রাক্তন এক পুলিশ আধিকারিকের। কারণ, জনতার 'জাস্টিস ফর আরজি কর' স্লোগানে গলা মেলানোর জনতার সংখ্যা যেন কিছুতেই সরকারের আয়ত্তে আসছে না।
আবার শুরু হয়েছে পূর্ণ কর্মবিরতি। রাতভর জেনারেল বডি (জিবি) বৈঠকের পর মঙ্গলবার ভোরে জুনিয়র ডাক্তারেরা একযোগে ঘোষণা করেছেন, ১০ দফা দাবি না-মেটা পর্যন্ত তাঁরা আবার সব কাজ থেকে সরে থাকবেন। তবে প্রায় আট ঘণ্টা ধরে চলা বৈঠকে পূর্ণ কর্মবিরতিতে ফেরার সিদ্ধান্ত সমর্থন করেননি অনেকেই। উল্টো দিকে একটা বড় অংশ বলেছেন, চূড়ান্ত আন্দোলনে ফিরে সরকারকে চাপে না-ফেললে এই লড়াই জেতা সম্ভব নয়। পূর্ণ কর্মবিরতিতে ফেরার চাপ তৈরি করতে বৈঠকে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছিলেন মহিলা জুনিয়র ডাক্তারেরা। নিজেদের আতঙ্ক, নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন এই চিকিৎসক পড়ুয়ারা। তাই উৎসবের আবহে যে মুখ্যমন্ত্রীর উৎকণ্ঠা যে বজায় থাকবে, তা জানান দিয়েছে উৎসবের প্রাক লগ্ন।
0 comments:
Post a Comment